২২ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৩৭ |
১৮+
পাথরবৃষ্টিতে কবর হলো না জেরিনের। তাকে হেঁটে হেঁটে ঘরে আসতে হলো। কি করবেন এখন জেরিন? দ্রুত কয়েকটা সম্ভবনা মাথায় খেলে গেল,স্ট্রেইট ইমরানকে গুলি করবেন? দুইটাকেই গুলি করবেন? নিজে আত্মহত্যা করবেন? নাকি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবেন? একে একে সব ক’টি সম্ভবনা বাতিল করে দিয়ে কাবার্ড থেকে টেনে বার করলেন পেট মোটা ওল্ড স্মাগলারের বোতলটা।গ্লাসে ঢাললেন কাঁপা কাঁপা হাতে,পানি বরফ কোন কিছু ছাড়াই ‘র’ ঢেলে দিলেন। জ্বলতে জ্বলতে নেমে গেল নিচে।ওখান থেকে ওপরে ঠেলে উঠে মাথার সেলগুলোকে ঝাঁকি দিয়ে বিক্ষিপ্ত করতে পাঁচ মিনিট মত সময় নিল। তার পরের পেগটা যখন নামল তখন আর হাত কাঁপছে না।জ্বলুনিও নেই। চার নম্বর পেগের পর পুরো ব্যাপারটা ইল্যুশন অব সেক্স সিনড্রোম ভাবতে পেরে একটু ভাল বোধ করলেন,এবং খানিক বাদে ঘুমিয়ে পড়লেন।
পুরো ব্যাপারটা যেন স্বাভাবিক দাম্পত্য ঘটনা এমন অস্বাভাবিক রকম স্বাভাবিকতায় দুজন যার যার ঘরে চলে গেল,কিন্তু যাবার সময় হঠাৎ ডোনার চোখ চলে গেল কন্ট্রাসেপ্টিভের খালি খোসাটার দিকে! এক চিলতে ক্ষীণ বিদ্রুপমাখা হাসির রেখা ফুটে আবার মিলিয়ে গেল! একটু কি দেরি হয়ে গেছে? ঘরে ফিরে ওয়াশ রুমে ঢুকে অনেকক্ষণ খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে নিজেকে দেখল ডোনা। ও ঘরের ফেলে আসা ভাবনা ছুঁটতে ছুঁটতে এমন এক সিদ্ধান্তে এসে থামল যেখান থেকে ফেরার আর উপায় নেই! কি এক অজানা আশঙ্কায় গোটা শরীরটা ওপর থেকে নিচ পর্যন্ত শির শির করে উঠল! কি মনে করে অচেনা আর এক সম্ভবনার কথা মনে করে বিজাতীয় এক আনন্দ শিহরণও খেলে গেল।
পর দিন রাত এগারটা বেজে যাওয়ার পরও জেরিন ঘরে না ফেরায় ডাইনিং টেবিলে একাই বসে ছিল ডোনা। সন্ধ্যের দিকে জেরিন ইমরানকে নিয়ে বেরিয়েছিলেন। দুজনের কেউ ফেরেনি। ডোনা ঠিক কার জন্য অপেক্ষা করছিল জানে না,কিন্তু না খেয়ে বসে ছিল। বার কয়েক সেল ফোনে কলও দিয়েছে। দুজনের কেউ রেসপন্স করেনি। চাকর-বাকররা ডোনাকে ঘিরে এটা ওটা বলে চলেছে , ঠিক সেই সময় বাড়ির বাইরে সাইরেন তুলে একটা এ্যাম্বুলেন্স এসে থামল।দারোয়ান,চাকর-বাকররা সবাই দৌড়ে নিচে নেমে গেল। মিনিট দশেক পর নিচের লাউঞ্জে ভাঙ্গাচোরা থ্যাতলানো একটা মৃতদেহ শুইয়ে দিল কারা যেন।ডাইনিং থেকে উৎসুক হয়ে বেরুনো ডোনা সিঁড়ি বেয়ে দ্রুত নেমে এলো। কাছে এসেই চিনতে পারল-মা !
এবং এই প্রথম ডোনার মুখ থেকে অপার্থিব চিৎকারের মত শব্দটা বেরিয়ে এলো-মা ! মা গো !
কতক্ষণ জ্ঞান হারিয়ে পড়ে ছিল জানে না। কারা যেন ওকে ধরাধরি করে ওপরে নিয়ে এলো। নিজের ঘরে এসে কি করবে সেটা মনস্থির করতে মাত্র মিনিট পাঁচেক সময় লাগল ওর। ড্রয়ার হাতড়ে সেই কালোসূতোয় বাঁধা ক্রসটা হাতে নিয়ে দৌড়ে বেরিয়ে এলো। পেছনে বাড়ির বহু পুরোনো মানুষগুলোও। কিন্তু কেউই আটকাতে পারল না ওকে। বাইরে তখন একঘেয়ে টিপ টিপ বৃষ্টি। কালো পিচের ওপর দিয়ে সোজা টানা হেঁটে চলেছে ডোনা। কোথায়,তা জানে না। শুধু জানে এখান থেকে চলে যেতে হবে……….
আরো কিছু সময় পর ফিরল ইমরান। ঘটনার আকষ্মিকতায় কি করবে বুঝে উঠতে গিয়ে গুলিয়ে গেল। জেরিনের লাশের পাশে থাকবে? নাকি ডোনাকে খুঁজে বের করবে? লোকজনকে কিছু একটা হড়বড় করে বলে দৌড়ে বেরিয়ে গেল ইমরান। এই বৃষ্টিতে এত অলি-গলির গোলকধাঁধায় কোথায় খুঁজবে? কি ভাবে পাবে? পেছনে কি ঘটেছিল,কেন কি ভাবে জেরিন মারা গেলেন সেসব এখন আর মাথায় আসছে না। কেবল একটাই চিন্তা বুকের ভেতর হাতুড়িপেটা করছে….. ডোনাকে পেতে হবে……সময় সম্পর্কে কোন ধারণাই নেই ইমরানের ,জানে না ক’ঘন্টা ধরে হাটছে ও……চূড়ান্ত ব্যর্থতা হতাশায় যখন চিৎকার করে চেচিঁয়ে উঠতে ইচ্ছে হলো ওর, ঠিক সে সময় একটা অসম্পূর্ণ বাড়ির সানসেটের নিচে খুঁজে পেল ডোনাকে! জবজবে ভেজা গায়ে মাটিতে পা ছড়িয়ে বসে আছে ডোনা! দৌড়ে কাছে যাওয়ার পরও কোন কথা বলল না ডোনা। মাটি থেকে ওকে টেনে তুলে পাগলের মত গায়ে মাথায় হাত বুলাতে লাগল ইমরান, কিন্তু অদ্ভুত রকম শান্ত ডোনা। ইমরান গড়গড় করে কি সব বলে যাচ্ছে কিছুই যেন ওর কানে ঢুকছে না।ইমরান যখন ওকে পাঁজাকোলে তুলে নিল তখনো নিঃশ্চুপ ডোনা!
আরো ঘন্টা দুয়েক পর ডোনার বেড রুমে খাটে শোয়ানো ডোনার পাশে বসে গায়-মাথায় হাত বুলিয়ে ইমরানের আদর করার দৃশ্য দেখলে মনে হবে এক অপার স্নেহশীল পিতা তার আদরের কন্যাকে ঘুম পাড়িয়ে দিচ্ছে! সারা রাত ডোনা আর কোন কথাই বলেনি। ও ঘুমোনোর পর ইমরানকে পুলিশ,মর্গ,লাশের সৎকার বিষয়গুলো নিয়ে ভাবতে হলো। ও বেশ ভাল ভাবেই বুঝল ওর ওপর পুলিশের সন্দেহ দানা বাঁধছে। পর দিন চার-পাঁচ রকম সরকারি সংস্থা আর সৎকার বিষয়ক ঝামেলা শেষ করার পর ভাবতে চেষ্টা করল এর পর কি ঘটতে যাচ্ছে? পুলিশ ওকে বাড়ির বাইরে যেতে নিষেধ করে গেছে।
এই যে এতবড় একটা ঘটনা ঘটে গেল কিন্তু কিছুতেই যেন ডোনা ছাড়া অন্য বিষয়গুলো ইমরানের মাথায় আসছে না।একবারও মাথায় এলো না,কেন কি ভাবে জেরিন মারা গেলেন ! একে একে সব আনুসাঙ্গিকতা শেষ হওয়ার পর ডোনাকে নিয়ে নতুন চিন্তা শুরু হলো……সেই যে নিঃশ্চুপ হয়েছে ডোনা তার পর থেকে আর একটা কথাও বলেনি! তাকে কিছু খাওয়ানোও যায়নি!এক সময় নিজ হাতে খাবার-দাবার নিয়ে ইমরান ডোনার ঘরে ঢুকল…..ডোনার কাছাকাছি আসতেই মুখের তালা খুলে বেরিয়ে এলো সেই নির্মম সত্যটা! যেটা ঘুণাক্ষরেও ইমরানের মাথায় আসেনি!
‘মিঃইমরান আপনি আমার কাছে আসবেন না!’
‘কেন ডোনা? আমাকে আমার কাজটা করতে দাও অন্তত……’
‘না, আপনি আমার মা কে খুন করেছেন ! আপনি খুনি ! আপনি লোভী ! আপনি আমাদের সবকিছু শেষ করেছেন। আপনি জাস্ট এই মুহূর্তে এ বাড়ি থেকে চলে যান’।
‘ডোনা প্লিজ বোঝার চেষ্টা কর…….’
‘আর একটিও কথা নয়, আপনি যান’।
তার পর আর কথা বাড়ায়নি ইমরান। ডোনার ঘর থেকে বেরিয়ে নিজের ঘরে ঢুকে প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসপত্র নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছিল। নিজের তালাবন্ধ ফ্লাটে নির্ঘুম কেটেছিল সারা রাত। পরদিন সকালেই আবার ফিরে এসেছিল এ বাড়িতে। এসে যা শুনল তা শোনার জন্য সামান্যতম প্রস্তুতিও ছিল না ওর! আজ খুব ভোরে ডোনা একটা ব্যাগ গুছিয়ে চলে গেছে ! কাউকে কিছু বলে যায়নি। পুরোনো মানুষগুলো বহু চেষ্টা করেও ঠেকাতে পারেনি। ডোনার ঘরে সব কিছু ঠিকঠাক আছে…..কেবল ডোনা নেই! এই প্রথম ইমরান অনুভব করল ডোনাকে ছাড়া ও বাঁচবে না! ট্রাস্ট,উকিল,এ্যাসেট কি কি সব বলছিল বাড়ির লোকেরা কিছুই ওর মাথায় ঢুকছিল না। হন হন করে গেট দিয়ে বেরিয়ে এলো ইমরান। কি মনে করে দারোয়ানের হাত থেকে চেইনটা নিয়ে কুকুরটাকে ছেড়ে দিল।
সময়ের অমোঘ নিয়মে সময় গড়িয়ে গেছে ইমরানের জীবন থেকে। তার পরের ঘটনা গুলো ঘটে গেছে অনেকটা স্লাইড শো’ এর মত। ইমরানের চাকরিটা চলে গেছে। ডোনার সমস্ত লিঙ্ক খুঁজেও কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। দুই দু বার দার্জিলিংও ঘুরে এসেছে ও। কেউ জানে না। কেউ দেখেনি ডোনাকে। ডোনা অধ্যায়টা মাথা থেকে যতবার ঝেড়ে ফেলতে চেয়েছে ততবারই মাথার একেবারে গভীরে ঢুকে গেছে। উদ্ভ্রান্ত ভাঙ্গাচোরা ইমরান অবশেষে শেষ বারের মত বেরিয়ে পড়ল।
কেন জানে না ওর ধারণা হলো ডোনা দার্জিলিংয়েই কোথাও আছে। শৈশব কেটেছে এখানে। আর তো কোথাও চেনে না ও! দার্জিলিংয়ে আসার পর এক একটা দিন পাথরের মত গড়িয়ে গড়িয়ে শ্লথ ভাবে পার হচ্ছিল। একদিন বারে মদ খেতে গিয়ে আবছা একটা খবর পেল! এক মুহূর্ত দেরি না করে গাড়ি ভাড়া করে নিজেই ড্রাইভ করে ছুটল। একে ওকে জিজ্ঞেস করে নিদৃষ্ট জায়গায় গিয়ে ধ্বক করে উঠল বুকের ভেতর- যদি ডোনা না থাকে এখানে! গাড়ি থেকে নেমে ভীরু কাঁপা কাঁপা পায়ে একটা পাথরের দেওয়াল দেওয়া ঘরের কাছে দাঁড়াল! বুকের কাঁপনটা তখন নিজেই যেন শুনতে পাচ্ছে! কাঠের দরোজাটার সামনে দাঁড়াতেই দরোজাটা খুলে গেল! সামনে দাঁড়িয়ে আছে ডোনা! হতাশা আবেগ ভালবাসা স্নেহ আকুলতা সব এক সাথে ঘোট পাকিয়ে যন্ত্রের মত ইমরানকে ঠেলে ভেতরে নিয়ে এলো…..কোন কথা নেই, দুজন দুজনের দিকে নিঃষ্পলক তাকিয়ে আছে! ইমরানই প্রথম নিরবতা ভাঙ্গল-
‘বসতে বলবে না ডোনা……’
‘হ্যাঁ বসো..’
‘ডোনা জান আমি’….হড়বড় করে শত শত কথা একসাথে বেরিয়ে আসতে গিয়ে জট পাকিয়ে কিছুই বেরুল না।
‘আমি গাড়ির শব্দ শুনেই বুঝেছিলাম তুমি ’
‘কি করে বুঝতে পারো..?’
‘জানি না,তবে জানতাম তুমি আমাকে একদিন খুঁজে পাবে..’
‘ডোনা তুমি কি এখনো মনে কর আমি তোমার মা’ কে……’
‘নাহ্,বাদ দাও,আমি জানি তুমি মাকে খুন করো নি। রামু কাকা পরদিন বলেছিল- মা খুব বেশি ড্রিংক করে গাড়ি চালাতে গিয়ে এ্যাক্সিডেন্ট করেছিল……..
‘তাহলে এখনো কেন তুমি আমার উপর রাগ করে থাকবে? ঘরে ফিরে চল ডোনা…..’
‘তা কি করে হয়?’
‘কেন হয় না? আমরা একসাথে থাকব…..তুমি আর আমি…..তুমি ঢাকায় কোথাও ভর্তি……’
‘আমি বিয়ে করেছি…..আমার স্বামী আছে যে…..’
‘ডোনা ! কি বলছ তুমি ? এ কি করে হয় ?
‘কেন হয় না?’ যে ছেলেটি আমাকে সেই শেখরের হাত থেকে বাঁচিয়েছিল তার নাম অর্ণব। বাবা-মা একসাথে রোড এ্যাক্সিডেন্ট করার পর আর পড়তে পারেনি। বারে কাজ করে। বার টেন্ডার। ওকেই আমি বিয়ে করেছি……আমি এখন বেশ ভাল আছি……
একসাথে কোথাও যেন অনেকগুলো বাজ পড়ল। ইমরানের শূণ্য চোখ ডোনার শ্রান্ত চোখে কি যেন খোঁজার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলো। নির্বাক ইমরান একদৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিল।ডোনার চোখ মুখ গলা বুক বেয়ে পেটের ওপর এসে স্থির হলো। ভিষণ ভাবে চমকে উঠে ডোনার দিকে তাকাতেই ডোনা মাথা ঝাঁকিয়ে প্রশ্নের উত্তর দিয়ে দিল। এক ঝটকায় ইমরান উঠে দাঁড়িয়ে ডোনাকে জড়িয়ে ধরল। ডোনাও ওকে জড়িয়ে ধরে বুকের কাছে মুখ ঘসতে ঘসতে বলল-
‘খুব বেশি দেরি নেই আর..ডাক্তার বলেছে আর মাস দুয়েক পরে…..’
‘ডোনা ওটা কার?’
‘জানি না’।
‘আমি জানি ওটা আমার সন্তান,ডোনা আমাদের সন্তান…..ডোনা আমরা ওই সন্তানকে নিয়ে আবার নতুন করে বাঁচব…….
‘তা হয় না।আমার স্বামী সব জেনেই মেনে নিয়েছে। পেটে যে আছে সে আমাদেরই সন্তান..’
‘ডোনা তুমি জান যে ও আমারই সন্তান,আমাকে তুমি আর একটা সুযোগ দাও প্লিজ….’
‘তা হয় না,তুমি চলে যাও,তোমাকে দেবার মত আর কিছু নেই আমার,তোমাদের ওই বাড়ি গাড়ি টাকা পয়সা সবইতো ছেড়ে এসেছি আমি,এবার আমাকে আমার মত একা থাকতে দাও।’
‘আমি তোমাকে নিয়ে যাব ডোনা..’ কথাটা শেষ করার সাথে সাথেই ডোনা উঠে দাঁড়াল।
‘অর্ণব ফেরার সময় হলো..তুমি চলে যাও…..ড্যাড !’ ড্যাড শুনেই ঝট করে উঠে দাঁড়াল ইমরান। ডোনাকে কাছে টেনে জড়িয়ে ধরল। কি এক অদ্ভুত পরাবাস্তবতায় মনুষ্য সমাজের দুইটি সম্পর্ক এক সাথে অনুভূতি প্রকাশ করতে লাগল ! পিতার পরম স্নেহ কন্যাকে বুকের ভেতর আগলে রেখেছে…..আবার সেই কন্যার শরীরে আর এক শরীর নড়েচড়ে বেড়াচ্ছে সেও সেই পিতার ! কোন সস্পর্কটা কি ভাবে মেটানো যায় দুজনের কেউ তা জানে না,জানতে পারছে না…..শেষ বারের মত ডোনাকে শক্ত করে জড়িয়ে ডোনার মুখটা তুলে কাতর মিনতি করে ইমরান……ডোনা, মাগো আর একবার বাবা বলে ডাক মা…..আমি তো পাপের কলস পূর্ণ করে ফেলেছি এবার খালি করতে দে মা…..ডোনা শব্দ করে কাঁদল না। মুখ উঁচু করে তাকিয়ে থাকল।টপ টপ করে জলের অবিশ্রান্ত ধারা গড়িয়ে চলেছে…………………..
ইমরানের গাড়ি স্টার্ট নেওয়ার পর ডোনা রক চেয়ারটায় বসে পড়ল। একটু একটু হাঁপাচ্ছে।কেন যেন ইমরানের গাড়িটা সোজা এগোচ্ছিল না।এদিকে ওদিকে পাথরে ঘসা খেয়ে খেয়ে এগোচ্ছিল। ফুলকি দিয়ে আগুনের ছটা উঠছিল। আরো বেশ কিছুক্ষণ পর ডোনা আবছা একটা শব্দ পেল লোহালক্কড়ের শব্দের মত, তার ঠিক পর পরই দুপ্ করে আর একটা শব্দ।
কি ভেবে দুই হাত পেটের ওপর রেখে চোখ বন্ধ করল। ফোঁটা ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়তে লাগল হাতের ওপর। তার নিচে নড়েই চলেছে শিশুটা…………………..
চলবে না।
লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): ডোনা ;
প্রকাশ করা হয়েছে: এন্টি গল্প বিভাগে । সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জুন, ২০১০ রাত ৩:৫৫ | বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার ও সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশকারীর…
লেখক বলেছেন:
কাহিনী খতম !
লেখক বলেছেন:
সাথে ছিলেন।সে জন্য অনেক ধন্যবাদ।

লেখক বলেছেন:
থ্যাংকস।

কখনোই স্বস্তি দেয় না কাউকে……
জীবনের ধারাপাত বলে কথা।
শুভকামনা।
লেখক বলেছেন:
ঠিক তাই।
আপনি প্রতিদিন থেকেছেন গল্পটার সাথে সে জন্য অভিনন্দন আপনাকে।

আছে কিছু কওনের মাগার সেইদিন, এইখানে নানীচে পুরা গল্পটা এক সাথে করে পিডিএফ করে দিলাম, কেমন হইছে জানায়েনএন্টিগল্প > বিটার মুন ১৮+
লেখক বলেছেন:
অসাধ্য সাধন করেছেন ! কাজটা আমি করতে চেয়েও আলসেমিতে পারিনি। অনেক ধন্যবাদ ধ্রুব। আল্লাহ আপনাকে অতি স্বত্তর প্রথমে দুই,পরে তিন করে দিক!
পাগলের মত হাস্যকর ভাবে আবার বাঁচতে চাওয়া।
লেখক বলেছেন:
সব হারানো মানুষদের এই-ই হয়! হাস্যকর সব কাজ করে বসে!
শেষ পর্যন্ত মানুষ কিন্তু বাঁচতেই চায়, পাগলের মত হলেও…………………………………………….
ধন্যবাদ গভীর পর্যবেক্ষণের জন্য।

লেখক বলেছেন:
একেবারে অন্যরকম ভাবে বললেন! ভাল লাগল জেনে আনন্দিত হলাম। লেখার মূল্যায়ন হোক বা অবমূল্যায়ন হোক আলোচনা লেখককে প্রেরণা যোগায়। সেটা যোগাল।
ধন্যবাদ।
লেখক বলেছেন:
দিল খুলে কাউকে যদি দোয়া করতেই হয়,তাহলে এই দোয়াই করা উচিৎ !

লেখক বলেছেন:
ভয়ে ভয়ে ছিলাম !

আরেকটা বৈশিষ্ট্য না বললেই নয়; দৃশ্যগুলো চরিত্রদের চোখেই দেখা, কথকের ব্যাখ্যার উতোর-চাপানো নয়, এটা পাঠককে ব্যাপক স্বস্তি এবং লেখাটিকে সুখপাঠ্যতা দিয়েছে।
লেখক বলেছেন:
ধন্যবাদ নুশেরা। এই ঘরানার গল্প এক্সপেরিমেন্ট হিসেবে লিখতে চেষ্টা করলাম। ছাইপাশ কি যে হলো কে যানে!আমার মনে হয়েছে ইমরানের শেষ দিককার অনুভূতি গুলো যথার্থ হয়নি! দুই সম্পর্কের টানাপোড়েন আরো কিছুটা স্পেস দাবি করে।কিন্তু এত বড় হয়ে যাচ্ছিল যে থামতেই হলো।

..পরে দেখলাম আস্তে আস্তে ঘটনা প্রবাহ মোড় নেয়াটা যথার্থ হয়েছে..কিছু কিছু সম্পর্ক সমাজ স্বীকৃ্ত নয় আবার কিছু কিছু সম্পর্ক জন্মগত ভাবেই সমাজ বহির্ভূত। এমন বহির্ভূত সম্পর্ক নিয়ে লিখা আগে পড়িনি …গল্পটার সার্থকটা এখানেই যে এটা প্রকৃ্তির নিপাতনে সিদ্ধ পরিণতির সাথে মিলিয়ে যায়নি বা শেষ হয়নি বরং জন্ম দিয়েছে একটা বস্তুগত দ্বন্দ্বের।এই দ্বন্দ্বটিই গল্পটিকে এন্টি গল্প করেছে…।আরো একটা ব্যপার ভালো লাগলো সেটা হল কাহিনীর গতিময়তা।গল্পটার সবগুলো পর্বই খাপছাড়া মনে হয়নি..সুন্দর ট্রানজিশন ছিল ঘটনাক্রমে আর কাহিনীর বিন্যাসে ক্লাইম্যাক্সের পাশাপাশি নাটকীয়তাও (প্রথম পর্বে) পাওয়া গেছে।
সবশেষে একটা সুন্দর গল্প উপহার দেয়ার জন্য ধন্যবাদ জানাই
মনজুরুল হক বলেছেন:
@নিবিড়।
এই, আপনি কি ক্রীটিক সাবজেক্টের শিক্ষকতা করেন নাকি? এত অদ্ভুত ভাবে…কই আর কেউ তো দেখে নি,দেখলেও বলেনি ! আমার খুব প্রিয় কয়েকটা শব্দ ব্যবহার করলেন ! ” নিপাতনে সিদ্ধ ” ” বস্তুগত দ্বন্দ্বে “এগুলো । আমি প্রায়শঃই এই শব্দ গুলো ব্যবহার করি!
এবং আজ মনে হচ্ছে আপনাকে লেখক হিসেবে যে মূল্যায়ন গত কয়েকটা পোস্টে লিখেছি তা যথার্থ! দ্বন্দ্ব শব্দটা তো অনেকে ভয়ে ব্যবহারই করে না! চালিয়ে যান। আপনার হাতে ম্যাটরিয়ালস আছে!
গভীরতম কৃতজ্ঞতা ।
ঊশৃংখল ঝড়কন্যা বলেছেন: বেশ অস্থির একটা সময় পাড় করলাম এতক্ষন গ্লপটা পড়তে পড়তে… ঘটনার ধাক্কাগুলো বেশ তাড়াহুড়োয় এসেছে কিন্তু তাতে গল্পের গভীরতায় নাড়া পড়ে নি। ইমরানের টানাপোড়েন নিয়ে বিষাদ, ভেঙে পড়া বা অনিশ্চয়তাটাও যেমন ওর্গানাইজড্ ভাবে এসেছে আবার ডোনার কমিটমেন্টের দোটানাটাও তেমন ভাবে ব্যপারটা অফসেট করেছে। এই ব্লগীয় প্ল্যাটফর্মে অন্যরকম টানটান একটা সিরিজ উপহার দেয়ার জন্য লেখাককে শুভেচ্ছা।
ভাল থাকুন সবসময়!
লেখক বলেছেন:
এত বড় সার্টিফিকেট দিয়ে দেওয়াটা কি ঠিক হলো?প্রচলিত ফর্মটর্ম ভেঙ্গেচুরে নিজের মত করে একটা স্টাইল তৈরি করে লিখি।মনের আনন্দে লিখি।এমনতর সার্টিফিকেটা পেতে শুরু করলে তখন দায়বদ্ধতার জোঁয়াল কাঁধে চেপে বসবে,এবং দায় মেটাতে ব্যর্থ হলে আত্মগ্লানি কুরে কুরে খাবে ! নাহ, ঠিক হলো না এটা !
মঙ্গলাকাঙ্খার জন্য ধন্যবাদ।
মনজুরুল হক বলেছেন:
@ জটিল। ধন্যবাদ আপনাকে।এই চারটি পর্ব একসাথে করে দিয়েছে স্নেহাস্পদ রাতমজুর। সেটা আলাদো পোস্টে দিয়ে দিচ্ছি। যদি কেউ একসাথে পড়তে চান তাদের জন্য।
১. ২২ শে নভেম্বর, ২০০৮ রাত ১২:৪৩