১৭ ই জুন, ২০১২ সকাল ১১:৫৪ |
গত কয়েক দিনের খবরের কাগজে চোখ রাখলেই দেখা যাচ্ছে আশুলিয়ায় গার্মেন্ট শিল্পাঞ্চলে অসন্তোষের বিস্তারিত খবর। ঢাকার বাইরে একসাথে একই অঞ্চলে অনেকগুলো গার্মেন্ট কারখানা থাকায় এখানে যখনই কোনো একটি কারখানায় অসন্তোষ বা প্রতিবাদ দানা বেঁধে ওঠে সঙ্গে সঙ্গে তা ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের অন্যান্য কারখানায়। এটাই স্বাভাবিক। কারণ, এই শিল্প কারখানাগুলোর প্রায় সবগুলোর সমস্যাই একই ধরণের। প্রায় সব কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে বেতন, ভাতা, বাড়িভাড়া, নাস্তার পয়সা, ওভারটাইম, চিকিৎসাভাতা এবং বোনাস নিয়ে অসন্তোষ রয়েছে। মাঝে মাঝেই এই অসন্তোষ দানা বেঁধে ওঠে। আর সে সময় এমন ঘটনা ঘটে যা আজ থেকে পনের-কুড়ি বছর আগে ঘটত না।
আগে এই শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ হলে মালিক পক্ষ সেটার মোকাবেলা করত। কখনো মালিকের ‘নিজস্ব’ লোকজন, কখনো মালিকের পোষা গুণ্ডাপাণ্ডা, আবার কখনো শ্রমিকদের মধ্যে থেকে বাছাই করা ভাড়াটে লোকজন দিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের ‘শায়েস্তা’ করা হতো। তার পরও সে সময় মন্দের ভালো হিসেবে সরাসরি আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার হতো না বলে ক্যাজ্যুয়ালিটি কম হতো (আমরা এখন এই শ্রমিকদের রেগুলেশন মৃত্যু বা মৃত্যু মুখে পতিত হওয়াকে এক কথায় ‘ক্যাজ্যুয়ালটি’ বলি!)। কিন্তু গত পনের-কুড়ি বছর ধরে এবং বিশেষ করে শিল্প পুলিশ গঠন হবার পর থেকে গত কয়েক মাস ধরে এখানকার শ্রমিক অসন্তোষের গন্ধ পাওয়া মাত্র রাষ্ট্রের পুলিশ বাহিনী, র্যাব, বিজিবি, আনসারসহ বিভিন্ন বাহিনী অস্ত্রসস্ত্র নিয়ে শ্রমিক অসন্তোষ দমনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। স্বাভাবিক ভাবেই নিরস্ত্র শ্রমিকদের ইট-পাটকেল, অগ্নি সংযোগের জবাব আসসে বন্দুক থেকে। এবং খুবই স্বাভাবিক ভাবে এক একটা অসন্তোষে একাধিক শ্রমিকের মৃত্যু ঘটছে। শত শত শ্রমিক টিয়ার গ্যাস, লাঠি এবং বুলেটে আহত হচ্ছে।
এক একজন শ্রমিক নিহত হচ্ছে আর অসন্তোষের আগুনে যেন ঘি পড়ছে! মুহূর্তে সেই আগুন দাবানলে পরিণত হচ্ছে। রাষ্ট্রের বেতনভূক কর্মচারি আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘জনগণের’ জান মালের নিরাপত্তা বিধানের ‘মহান ব্রত’ নিয়ে শ্রমিকদের উপর হামলে পড়ছে। এবারও সেই একই ভাবে আশুলিয়ায় ঘটনা ঘটেছে এবং এখনো ঘটে চলেছে। রাষ্ট্র মালিক পক্ষের হয়ে তার সশস্ত্র শক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। এবং এক পর্যায়ে গার্মেন্ট অসন্তোষ হয়ে দাঁড়াচ্ছে শ্রমিক-পুলিশ মরণঘাতি দাঙ্গা। এ যেন শ্রমিক অসন্তোষ দমন নয়, রাষ্ট্রের ভেতরেই ‘রাষ্ট্র বিরোধীদের’ দমন করা।
অথচ এর উল্টোটা হতে পারত। হওয়া উচিৎ ছিল। রাষ্ট্রকে সর্বদা নির্যাতিত, নিপীড়িতের পক্ষে দাঁড়াতে হয়। রাষ্ট্রকে সর্বদা তার জনগণের সাথে থাকতে হয়। এখানে শ্রমিক হচ্ছে রাষ্ট্রের সেই জনগণ বা নিপীড়িত শ্রেণী। খুব স্বাভাকি ভাবেই রাষ্ট্রের উচিৎ শ্রমিকের পক্ষাবলম্বন করা। শ্রমিকের স্বার্থ রক্ষা করা। কিন্তু বিস্ময়কর সত্য হচ্ছে বাংলাদেশের সরকার এবং এই বাংলাদেশ রাষ্ট্রটি বরাবরই শ্রমিকদের বিপক্ষে, মালিক শ্রেণীর পক্ষে। শুধু পক্ষাবলম্বন করলে ক্ষতি ছিলনা। রাষ্ট্র সরাসরি মালিকের পক্ষে। এবং তার শসস্ত্র শক্তি সরাসরি মালিকের হয়ে শ্রমিকের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধ ঘোষণা’ করেছে।
আর কত অন্যায়ের খতিয়ান দেয়া যায়! এই সেক্টরের জন্ম লগ্ন থেকে আজ অবধি এই সেক্টরে যত শ্রমিকের মৃত্যু ঘটেছে তত জন শ্রমিকের বা সাধারণ মানুষের মৃত্যু আর কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে বা মহামারিতে ঘটেনি। এখানে শ্রমিকরা আগুন লেগে পুড়ে মরে। বলা ভালো স্টক লট ‘ক্লিয়ার’ করার জন্য কারখানায় ঠাণ্ডামাথায় আগুন দেয়া হয়। দমকল বাহিনী বা আগুন নেভানোর উপরকরণ যেন সময় মত অকুস্থলে না পৌঁছুতে পারে সেই ব্যবস্থাও নেয়া হয়। সেই আগুনে পুড়ে তো শ্রমিক মরেই, সেই সাথে মরে সিঁড়ি দিয়ে হুড়োহুড়ি করে নামার সময়। দরজা খুলে বাইরে বেরুনোর সময়। কম বেতনে বিনা চিকিৎসায় মরা, সুপারভাইজারের আঘাতে মরা, অগ্নিভীতিতে মরা, গণধর্ষনের কারণে মরা, বেয়াদবি করার কারণে পিটুনি খেয়ে মরা, কম পয়সায় ট্রাকে চেপে বাড়ি ফেরার সময় ট্রাক উল্টে মরা, অবাধ্য হওয়ায় ভাড়াটে মাস্তানের হাতে মরা তো প্রায় নিয়মিত ঘটনা। এর সাথে আরও একটি ‘রুটিন মাফিক’ মরা হচ্ছে পুলিশ-র্যাব-বিজিবি’র বন্দুকের গুলিতে, রাইফেলের বাঁটের আঘাতে এবং ইদানিং যোগ হওয়া গুম হয়ে মরা।
একে তো অসন্তোষের নিট ফলাফল হিসেবে পুলিশের গুলি খেয়ে মরছে, তার উপর অসন্তোষ সঙ্ঘটিত করার অপরাধে আইনি ত´কমা পরিয়ে জেল-হাজতে মরতে হচ্ছে গার্মেন্ট শ্রমিককে। সেভাবে মরেও তো শান্তি নেই! যে মরল সে বা তারা তো মরলই, যারা বাঁচল তাদের নামে অগুণতি মামলা। নাম না জানা অসংখ্য শ্রমিকের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা। তারপর চলবে দেন-দরবার। হয় বশ্যতা মেনে মামলা তুলো নাও, নইলে জেলে-হাজতে পচতে থাকো। গত কয়েক বছরে এই সেক্টরে এভাবে কত জনকে যে আইনি জালে জড়িয়ে কতজন শ্রমিক জেলে আছে বা কতজন শ্রমিক মারা গেছে তার কোনো সঠিক খতিয়ান কারো কাছে নেই। তবে যার যাচ্ছে সে বুঝতে পারছে স্বজন হারানোর ব্যথা।
দেশে রাজনৈতিক দলের অভাব নেই। শ’য়ের উপর দল। তার ভেতর প্রধান প্রধান দলগুলো আবার রেজিস্টার্ড। সরকারের কাছে নিবন্ধিত! সেই সব দলের শ্রমিক শাখাও আছে বিপুল কলেবরে। তারাও এই গার্মেন্ট সেক্টরে শ্রমিকের কাজ করছে। তারাও নির্যাতিত হচ্ছে, নিপীড়িত হচ্ছে। তার পরও তারা প্রতিবাদী নয়। কারণ, তারা সরকারি দল বা প্রধান বিরোধী দলের লোক। একদল এবারে ক্ষমতায়, অন্য দল আগামীতে ক্ষমতায়। সুতরাং তারা কোনো না কোনো ভাবে সরকারের কৃপাটৃপা পাওয়ার লাইনে আছে। তা বাদে আর যে সব বাম নামধারী দল আছে তারা এতটাই ‘মৌসুমী’ এবং শক্তিহীন যে শ্রমিকদের পক্ষে বুক চেতিয়ে দাঁড়াবার সামর্থ এবং চেষ্টা কোনোটাই তাদের নেই। ফলে গার্মেন্ট শ্রমিকদের নির্বিচারে গুলি করে মারলেও এই রাষ্ট্রের কিসসুটি আসবে যাবে না। যায়ও না।
এই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান হিসেবে আদালত আছে। সেখানেও শ্রমিকের পক্ষে কথা বলার কেউ নেই। এই রাষ্ট্রের তাবত সুশীল, চিন্তাশীল বুজর্গ, মননশীল জাতির বিবেক, গায়ে-মাথায় মুক্তিযুদ্ধের তকমা আঁটা দেশপ্রেমিক, সরাসরি কৃষকের ঘর থেকে উঠে আসা শসস্ত্র বাহিনী সমূহের সাধারণ সৈনিকেরা এবং অগুনতি সুবিধাভোগী মধ্যবিত্ত প্যারাসাইট সমেত প্রায় সমগ্র দেশ-জাতি কি এক বিরল কারণে এই গার্মেন্ট শ্রমিকদের মরে যাওয়া দেখে বসে বসে। কাগজে কাগজে রিপোর্ট হয়, শ্রমিকের লাশের ছবি দেখে কেউ কেউ একটু আধটু উঁহ্ আহ্ করে। তারপর সব কিছু আবার আগের মত শান্ত স্বাভাবিক হয়ে আসে। প্রায় দেড় কোটি মানুষের বোঝা নিয়ে এই নগরীতে আরো একটি সকাল হয়, আবার দিন গড়িয়ে রাতও আসে। অকস্মাৎ বিস্মৃত মানুষ খুব দ্রুত ‘খারাপ’ খবরগুলো ভুলে যায়। কেবল ওই মরে যাওয়া শ্রমিকদের রক্ত বয়ে চলা ধমণীগুলো স্বজন হারানোর ব্যথায় কোঁকাতে থাকে। নিঃশব্দে।
এবারকার শ্রমিক অসন্তোষের পরের ঘটনাটি তাৎপর্যপূর্ণ। মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সভাপতি ঘোষণা দিয়েছিলেন শনিবার-রোববার অর্থাৎ ১৬ এবং ১৭ তারিখের মধ্যে শ্রমিক অসন্তোষ দূর হয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে একযোগে সকল কারখানা বন্ধ করে দেয়া হবে। এবং ১৬ তারিখ রাতে যথারীতি তিনি তার সংগঠন নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে আশুলিয়া অঞ্চলের সকল কারখানা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিয়েছেন। বিজিএমইএ’র নীতিমালার ১৩(১) ধারায় তিনি বন্ধ ঘোষণার ফরমান জারি করেছেন। তিনি যখন ১৫ তারিখে অমন হুমকি দিয়েছিলেন তার পর থেকে সরকারের কোনো পক্ষ তাদের এই হুমকিকে মোকাবেলা করার উদ্যোগ নিয়েছিল কি না জানা যায়নি। শ্রমিকদের প্রতিনিধিরা নিশ্চই বসেছিলেন। নিশ্চই বিভিন্ন মহল যারা এই সেক্টরের স্টে হোল্ডার তারা বসেছিলেন। কিন্তু কাজের কাজটি যে হয়নি তা টের পাওয়া গেল ১৬ তারিখ রাতে। এখন আশুলিয়ার সব কারখানা বন্ধ। আগামী কাল থেকে পরিস্থিতি ‘স্বাভাবিক’ না হলে দেশের বাকি সব কারখানাও বন্ধ করে দেয়া হবে বলে তারা ১৬ তারিখেই জানিয়ে দিয়েছেন!
ঠিক এই পরিস্থিতিতে দেশের সরকার কী করছে? কী করছে গার্মেন্ট সেক্টরের শ্রমিক নেতা বা বাম নামধারী শ্রমিক দরদীরা? এক অর্থে সরকারের ‘সাফল্য’ এখানে জাজ্বল্যমান! সরকারের পুলিশ যথারীতি বুলেট-ব্যাটনের মাধ্যমে আইন শৃঙ্খলা রক্ষা করেছে! তাদের দ্রুত অ্যাক্শনে ‘জনগণের’ জান মালের আর কোনো ক্ষতি করতে পারেনি অবাধ্য গার্মেন্ট শ্রমিকরা।
এ পর্যায়ে আমরা ১৬ তারিখের দুয়েকটি সংবাদপত্রের রিপোর্টে চোখ বুলিয়ে দেখি: ‘ আশুলিয়ার সব পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের দুই সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ। কাল রোববার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন সংগঠন দুটির নেতারা।
নেতারা বলেছেন, ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং পোশাকশিল্পকে অস্থিতিশীল করার জন্য দায়ীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোনো আশ্বাসের ভিত্তিতে কারখানা খোলা সম্ভব হবে না।’ একই সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে প্রয়োজনে সারা দেশের পোশাকশিল্প বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা ’(প্রথম আলো,১৬.০৬.২০১২)।
‘ টানা ৪ দিনের শ্রমিক অসন্তোষের পর গতকাল শুক্রবার ছুটির দিন হওয়ায় আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে। রাস্তাঘাটে যান চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। এদিকে শুক্রবার ছুটির দিনেও আশুলিয়ার হা-মীম গ্রুপসহ শিল্পাঞ্চলের বেশকিছু কারখানায় কাজ চলেছে আগের মতোই স্বাভাবিকভাবে। তবে সকালে ঘোষবাগ এলাকার রেডিয়েন্স কারখানার শ্রমিকরা তাদের বেতনÑভাতা বৃদ্ধির দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। গত বৃহস্পতিবার শ্রমিকদের বিক্ষোভের সময় সন্ত্রাসীরা বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল মাছরাঙ্গা টেলিভিশনের গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় অজ্ঞাত ৩০০ জন সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া জানান, গতকাল স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি ও বাড়ি ভাড়া না বাড়ানোর আশ্বাস দেয়ায় পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে (ভোরের কাগজ, ১৬.০৬.২০১২)’।
এই খবরের একটি বৈশিষ্ট লক্ষ্য করার মত! ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া গার্মেন্ট শ্রমিকদের বলছেন-সন্ত্রাসী! তিনি যদি শ্রমিকদের সন্ত্রাসীই বলেন বা মনে করেন, তাহলে তার বাহিনীর তো গুলি চালানো ‘ বৈধ’ হয়ে যায়! অবশ্যি এদেশে সব সময়েই গুলি চালানো বৈধ এবং আত্মরক্ষার জন্যই গুলি চালাতে হয়!
এখন কী ঘটবে? কারখানা কি আসলেই অনির্দিষ্ট কাল বন্ধ থাকবে? এই কারখানায় কি আর কোনো শ্রমিক কাজ করবে না? বাংলাদেশ থেকে কী গার্মেন্ট শিল্প উঠে যাবে? শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবী কী মেনে নেয়া হবে? এই সবগুলো প্রশ্নের উত্তর একটিই। আর তা হচ্ছে-না। এসবের কিছুই ঘটবে না। দুএকদিন পরই সব কারখানা খুলে যাবে। সব কলের চাকা ঘড় ঘড় করে ঘুরতে শুরু করবে। মালিকদের কোটি টাকা দামের ব্যান্ডেড গাড়ি সাঁআ সাঁই বেগে ছুটে চলবে। মালিকদের সমিতি কার্যালয়ে তুমুল খানাপিনা চলবে। গুলি চালানো পুলিশ সদস্য পুরষ্কৃত হবেন। শুধু একটি বিষয়ই আলোচনার টেবিল থেকে কর্পূরের মত উবে যাবে। আর তা হলো শ্রমিকদের দাবী-দাওয়া। শ্রমিকরা পুলিশের লাঠি-গুলির ভয়ে এবং পেটের মরণ ক্ষুধার কারণে তাদের সব ন্যায্য দাবী হয় সাময়ীক প্রত্যাহার করবে, নয়ত আগামী কোনো এক শরৎ কালে তাদের দাবী মেনে নেয়া হবে মর্মে দেয়া মূলো নাকের সামনে ঝুলিয়ে ঝুপড়ি ঘরে ফিরবে।
লেখাটির বিষয়বস্তু(ট্যাগ/কি-ওয়ার্ড): গার্মেন্ট, গার্মেন্ট সেক্টর, শ্রমিক, শ্রমিক শ্রেণী, পোশাক শিল্প, রপ্তানিমুখি শিল্প, পুলিশ, পুলিশের গুলি, গাড়ি ভাংচুর, আশুলিয়া ;
প্রকাশ করা হয়েছে: প্রবন্ধ বিভাগে । বিষয়বস্তুর স্বত্বাধিকার ও সম্পূর্ণ দায় কেবলমাত্র প্রকাশকারীর…
এডিট করুন | ড্রাফট করুন | মুছে ফেলুন
৩৪২ বার পঠিত৩২৭৭
মন্তব্য দেখা না গেলে – CTRL+F5 বাট্ন চাপুন। অথবা ক্যাশ পরিষ্কার করুন। ক্যাশ পরিষ্কার করার জন্য এই লিঙ্ক গুলো দেখুন ফায়ারফক্স, ক্রোম, অপেরা, ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার।
২৭টি মন্তব্য
১-১৩
১. ১৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ১২:২৩০
কালা পাহাড় ২০০০ বলেছেন: কাল থেকে আশুলিয়ার সব কারখানা বন্ধ। – প্রথম আলু | তারিখ: ১৬-০৬-২০১২
এই লেখাটা কমেন্ট হিসেবে প্রথম আলোতে দেয়া আছে। সাইন আউট করা অবস্থায় কমেন্ট দেখা যায় না, সাইন ইন করলে দেখা যায় এবং লেখাটা মডারেশন কিউতেও নেই। আজিব। এভাবে কমেন্ট শুধু লেখকের জন্য পাবলিশ করার কি দরকার। খবরের লিংকঃ Click This Link
মূল কমেন্টঃ “শ্রমিকের মনে আগুন জ্বালাও কঠিন আত্মবিশ্বাসে, কঠিন আত্মবিশ্বাসে।।
ছোট পাখিদের ঈগলের সাথে যুদ্ধে লড়িয়ে দাও, দাও দাও দাও। দুনিয়ার যত গরীব কে আজ জাগিয়ে দাও, জাগিয়ে দাও, জাগিয়ে দাও।
যে দেশের বুকে পায় না চাষীরা পেটের ক্ষুধার অন্ন, পেটের ক্ষুধার অন্ন।।
সে দেশের প্রতি শস্য কণায় আগুন লাগিয়ে দাও, দাও দাও দাও। দুনিয়ার যত গরীব কে আজ জাগিয়ে দাও, জাগিয়ে দাও, জাগিয়ে দাও।
- কবি ও দার্শনিক ইকবালের সাথে সুর মিলিয়ে বলতে চাই, শ্রমিকদের পেটের ক্ষুধার অন্ন যদি না মেটাতে পারে, তবে এর দরকার নেই।
ডলারের দাম বাড়ে, মালিকপক্ষের লাভ বাড়ে। কিন্তু, মুল্যস্ফীতির পরেও শ্রমিকের বেতন যদি না বাড়ে, শুধুই যদি বাড়ে করের বোঝা, তবেতো দুনিয়ার সব গরীব কে আজ জাগিয়ে দিতে হবে।”
যা কিছু ভাল, তার সাথে প্রথম আলু? তবে শ্রমিকদের সাথে এই প্রতারণা কেন? কাদের স্বার্থ রক্ষার এজেন্ডা?
১৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ২:৪০০
লেখক বলেছেন: গার্মেন্ট মালিকরা শ্রমিকের সাথে যা করে তা আর সব সেক্টরের মালিকরাও কম বেশী করে। এখানে পার্থক্য হচ্ছে এই সেক্টরের মালিকরা যেহেতু প্রধান প্রধান দলগুলোকে মোটা অংকের চাঁদা দেয় তাই তারা পুলিশকে পাশে পায় শ্রমিক নিপীড়নের জন্য।
জাগানো ব্যাপারটা অনেক দিন ধরেই এদেশে অনুপস্থিত। কে জাগাবে, কে ওঠাবে, কে পথ দেখাবে তার খোঁজ করতে করতেই পেরিয়ে গেছে বছরের পর বছর।
আপনার চরণগুলো উদ্দীপক।
২. ১৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ১২:২৬০
সাদাকালোরঙিন বলেছেন: শ্রমিকরা দাবী আদায়ের জন্য যদি সরাসরি ভাংচুরে যায় তাহলে মালিকপক্ষের কারখানা বন্ধ করে রাখতে দোষ কোথায় ?
বাড়িভাড়া বা নিত্যপন্যের দাম বাড়লে আলোচনা করে বেতন সমন্বয়ের ব্যবস্থা না করে সরাসরি ভাংচুর-আরাজকতাকে মেনে নেওয়া যায় না। মালিকপক্ষের কারখানা বন্ধ রাখাকে সমর্থন করছি এইজন্য যে তাতে দাঙ্গা হাঙ্গামা ও ভাংচুর বন্ধ হয়ে অন্তত আলোচনার দরজা খুলবে।
১৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ২:৪৮০
লেখক বলেছেন: শ্রমিকরা দাবী আদায়ের জন্য প্রথমেই ভাংচুর করে এটা মালিক পক্ষের সাফাই। ঠিক জানিনা, আপনি হয়ত মালিক পক্ষ।
যা হোক, জেনে দেখবেন কখনোই কোনো শ্রসিক সংগঠন দাবী আদায়ের জন্য ভাংচুর বা অবরোধে যায় না। আলোচনার টেবিলে বসে মালিক পক্ষের অনমনীয় মনোভাবের কারণে এবং সরাসরি দাবী মানতে অস্বীকার করার কারণে শ্রমিকরা বাধ্য হয়ে ওই পথে যায়। এটা খুব সহজ একটা হিসেব যে শ্রমিকরা জানে রাস্তায় নেমে ভাংচুর করলেই পুলিশ পেটাবে। এমনকি মেরেও ফেলবে। তার পরও যখন তারা রাস্তায় নামে তখন বুঝতে হবে তারা নিরুপায় হয়েই নেমেছে।
কারখানা বন্ধ করাকে সমর্থন করা ভালো কাজ। অন্তত কিছুদিন পরিবেশ দুষণ কম হবে। তবে ওই মালিকরা এই কাজটি সহজেই করতে পারত না যদি এটা বাংলাদেশ না হয়ে অন্য কোনো দেশ হতো। কারণ বন্ডেড অয়্যার হাউজ লাইসেন্স পাওয়ার পর তার শর্তই থাকে নিরবিচ্ছিন্ন উৎপাদনে থাকা। ১৩(১) ধারা বলে বন্ধ হয়ত করা যায়। সরকার যদি নিরপেক্ষ হতো তাহলে ফ্যাক্টরি লে-অফের সাথে সাথে সব কয়টার বন্ড লাইসেন্স বাতিল করে দিত। তখন দেখা যেত কে কাকে বন্ধ করে এবং বন্ধ করার হুমকি দেয়।
কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।
৩. ১৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ১২:৩৭০
জুল ভার্ন বলেছেন:
শ্রদ্ধেয় মনজুরুল হক, আপনার পোস্ট মানেই অনেক সত্য এবং কঠিন বাস্তব কিছুর উন্মোচণ। এই পোস্টও তার ব্যাতিক্রন নয়। পোষাক শিল্পে প্রতিনিয়ত ঘটনার/সমস্যার অসাধারন সুন্দর বিশ্লেষণী লেখার জন্য ধন্যবাদ।
গার্মেন্টস শিল্পের অচলাবস্থা দেশকে ঘোরতর সঙ্কটের মুখে ঠেলে দিবে এটি সন্দেহাতীত। এ শিল্পে সরাসরি কর্মরত রয়েছে ২২ লাখ শ্রমিক।২২ লক্ষ শ্রমিক মানে ২২ লক্ষ পরিবার বললে ভুল বলা হবেনা।অন্যদিকে রাস্ট্রীয় রপ্তানি আয়ের প্রায় ৭৫ ভাগ আসে গার্মেন্টস খাত থেকে। এ খাতের সাথে প্রত্যক্ষভাবে আড়াই কোটি লোকের ভাগ্য জড়িত। আন্তর্জাতিক বাজারে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখেও গার্মেন্টস খাতের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি আমাদের আশান্বিত করে তুলেছিল। কোটা সুবিধা উঠে যাবার পরও রপ্তানি বাড়ছিল। তবে কেন এ নৈরাজ্য? কেন এ খাতে আজ অশনি সংকেত? গার্মেন্টস সেক্টরের বিপর্যয় মানে তো দেশের বিপর্যয়। এইবিষয়ে আমার নিজের কিছু অবজার্ভেশন আছে-যা আপনার এই পোস্ট প্রসংগে শেয়ার করতে চাই-
গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকদের অধিকাংশই গ্রাম থেকে কর্মের এবং বেঁচে থাকার সন্ধানে শহরে আসা খটে খাওয়া মানুষ। এদের অধিকাংশই অশিক্ষিত বা কমশিক্ষিত। আবার গার্মেন্ট কর্মীদের ৮০ ভাগেরও বেশি নারী শ্রমিক। অভাবের তাড়নায় এসব কর্মীর বিশাল অংশ গার্মেন্টের কাজে জড়িয়ে পড়ে। প্রথমে ভাবে সামান্য বেতন হলেই বেঁচে থাকা যাবে। যখন কাজে জড়িয়ে পড়ে তখন দেখা যায়, তার বাসা ভাড়া, বাসার সামগ্রী ক্রয়, খাবারের ব্যবস্থা, পোশাক, কর্মস্থলে যাবার গাড়িভাড়া, রোগের চিকিৎসা এবং ভবিষ্যৎ সঞ্চয় মাথায় ভিড় জমায় এবং মাস শেষ গ্রামে থাকা পরিবারকেও টাকা-পয়সা দেয়ার বিষয়টিতো আছেই। গার্মেন্টস শিল্পে সাধারণ কর্মচারীদের চুরি বা ঘুষের সুযোগ থাকে না বললেই চলে। কিন্তু গ্রাম থেকে শহরে গিয়ে বেঁচে থাকার সংগ্রামের জন্য তার যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, কাজের পারিশ্রমিক থেকে তার অর্ধেকও অর্থ আয় হয় না। কিন্তু রাজধানী এবং চট্টগ্রামের মতো ব্যয়বহুল সিটিতে বিত্তশালীদের সঙ্গে বেঁচে থাকতে গিয়ে গার্মেন্ট কর্মীরা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে চরমভাবে হিমশিম খায়, হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু ততদিনে বিকল্প কিছু করার পথ থাকে না।
এসব সমস্যার কারণে এবং দীর্ঘদিন কাজ করে যখন শ্রমিকরা দেখছে তাদের সামনে আগামী দিনগুলো অন্ধাকার থেকে অন্ধকারময় তখনই তারা হতাশ, হতবাক এবং তারপর ক্ষুব্ধ। অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান ও সম্ভাবনাময় গার্মেন্ট শিল্পকে নিয়মের আওতায়, পরিচ্ছন্ন কাঠামোয় আনার ব্যাপারে সরকার উদাসীন। মালিক পক্ষ নিজেদের সুবিধামতো করে বেতন-কাঠামো ও কর্মীদের খাটায়। বিপুল পরিমাণ অর্থ মুনাফা করলেও গার্মেন্ট কর্মীদের ভাগ্য তিমিরেই থেকে যাচ্ছে। গার্মেন্ট কর্মীদের নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ বা ট্রেড ইউনিয়ন করার পথ রুদ্ধ রাখায় অধিকারও ঠিকমতো আদায়ের সুযোগ পাচ্ছে না। এসব হতাশা ও ক্ষুব্ধতা ভেতরে ভেতরে দানা বেঁধে গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে দেশের মধ্যে থাকা বিদেশি দালাল চক্র, দেশের উন্নয়নকে থামিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত চক্র এবং বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার হীন মানসের মানুষগুলো গার্মেন্ট শিল্পের মতো স্পর্শকাতর খাতকে বেছে নেয় ঢাল হিসেবে। তারা গার্মেন্ট কর্মীদের ঢাল হিসেবে বেছে নিয়ে গঠনতান্ত্রিক পথ এড়িয়ে ধ্বংসাত্মক মনোভাব সৃষ্টি করে। আর গ্রাম থেকে উঠে আসা সরল মানুষগুলো না বুঝেই সাময়িক উত্তেজনায় নিজের কারখানায় আগুন ধরিয়ে, ভাঙচুর করে তৃপ্তি পেতে চেষ্টা করে।
বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ ভাবেই একটি পুলিশে রাস্ট্র।এই সরকার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে তাই টিকে থাকার জন্য সরকার পুলিশ-র্যা ব নির্ভর হয়ে পরেছে। তাই যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ পাঠিয়ে দেয়, বিশাল কর্মী বাহিনীর সামনে পুলিশ অসহায় ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বেপরোয়া হয়ে লাঠি পেটাসহ কর্মীদের ওপর চালায় নির্যাতন। পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে। সরকার স্থায়ী সমাধানে মালিক-শ্রমিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে গার্মেন্ট শিল্পের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে উদাসীন বলেই মনে হয়।
অস্থিরতার কারণ যে শুধু বেতনভাতা কিংবা অত্যাচার-নির্যাতন নয়, এর পেছনে দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র সক্রিয় থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম। আরো আজে হুজুগে বাংগালীর গুজব প্রিয়তা। মাঝে মাঝে শ্রমিক হত্যার গুজবেও কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করছে একশ্রেনের শ্রমিক। সে ব্যাপারে সরকার ও মালিক পক্ষকে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়াসহ সহানুভূতির দৃষ্টিতে বিবেচনা করে সমাধানের উপায় উদ্ভাবনের জন্যও অনুরোধ সব মহলের। বিদেশী শক্তির ইন্ধনের কথা গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও আছে। এখন গোয়েন্দা সংস্থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে জানিয়েছে, গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো না হলে এ খাতে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে উঠতে পারে। কোনো রাখঢাক নয়, গোয়েন্দা সংস্থা যখন সরাসরি তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে, তখন আর কোনো সন্দেহ থাকতে পারে না যে, শ্রমিকদের অর্থনৈতিক আন্দোলনের আড়ালে তৃতীয় কোনো পক্ষ বড় ধরনের খেলায় চাল দিচ্ছে। তারাই নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নেড়ে তিলকে তাল করার চেষ্টা করছে।কিন্তু দূর্ভাগ্যের বিশয়-গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টকে সরকার ব্যাবহার করছে বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের শায়েস্তা করায়!
সব শেষে বলতে চাই-বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম শক্তিশালী খাত গার্মেন্টস সেক্টরকে বাইরের কোনো কোনো দেশও হিংসার চোখে দেখে। এ খাতকে যদি পঙ্গু করে দেওয়া যায় তাহলে তারা বাংলাদেশের বাজারটা দখল করে নিতে পারবে এই সরল সমীকরণ থেকে তারাও গার্মেন্টস সেক্টরে অশান্তি সৃষ্টির জন্য ইন্ধন কিংবা উস্কানি দিতে পারে এটা আমাদের গার্মেন্ট মালিকরা, প্রশাসন যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন ততই মঙ্গল। সরকারকেও বুঝতে হবে গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংস হয়ে গেলে অর্থনীতিতেও ধস নামবে।
ধন্যবাদ। +
১৭ ই জুন, ২০১২ রাত ৯:০১০
লেখক বলেছেন: প্রিয় জুল ভার্ন ভাই,
আপনার মন্তব্যটি চমৎকার। এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত লিখব। আপাতত পারছি না। এখনো বাসায় ফেরা হয়নি। আশা করছি আজ রাতেই লিখতে পারব।
শুভেচ্ছা।
১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:৫৯০
লেখক বলেছেন:
আপনার অনুসন্ধানী মতামতের সাথে প্রায় সম্পূর্ণ সহমত। তার পরও কিছু বিষয় আলোচনার দাবী রাখে। কথা দিয়েছিলাম সেসব আলোচনা করব।
প্রথমত: ” তবে কেন এ নৈরাজ্য? কেন এ খাতে আজ অশনি সংকেত? গার্মেন্টস সেক্টরের বিপর্যয় মানে তো দেশের বিপর্যয়।”
না। গার্মেন্ট সেক্টরের বিপর্যয় মানেই দেশের বিপর্যয় নয়। অর্থনীতির হিসেবে এই সেক্টরের পুঁজি এবং এ থেকে অর্জিত মুনাফা ফড়িয়া পুঁজি এবং ফড়িয়া মুনাফা। যা রাষ্ট্রের অর্থনীতিকে সাময়ীক চাঙ্গা করে বটে, তবে তা স্থায়ী ভাবে বড় ধরণের কোনো প্রভাব ফেলে না। তবে এটা ঠিক যে, এই সেক্টরের বিপর্যয় হলে কিছু উঠতি ধনী তাদের কৌলিণ্য হারাবে। কিছু ফোপর দালাল তাদের করে কম্মে খাওয়ার মচ্ছব খোয়াবে।
“রাজধানী এবং চট্টগ্রামের মতো ব্যয়বহুল সিটিতে বিত্তশালীদের সঙ্গে বেঁচে থাকতে গিয়ে গার্মেন্ট কর্মীরা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বাজারে চরমভাবে হিমশিম খায়, হতাশ হয়ে পড়ে। কিন্তু ততদিনে বিকল্প কিছু করার পথ থাকে না।”
এটা কি কেবলই বিত্তশালেদের সঙ্গে তাল মেলানোর প্রশ্ন? মনে হয় না। তাদের যে বেতন দেয়া হয় তা দিয়ে গ্রামে থাকলেও সংকট থেকে যেত। নিশ্চই শহরে থাকার কারণে তাদের বাড়তি টাকা লাগে, কিন্তু সেটাই কি মূল কারণ? না। মানুষের মৌলিক চাহিদা মেটানোর পরই কেবল মানুষ বিলাসীতা করতে চায়। কিন্তু গার্মেন্ট শ্রমিকরা যে বেতন পায় তা দিয়ে যেখানে মৌলিক চাহিদাই মেটে না সেখানে বিলাসীতা মেটানোর সুযোগ কই?
“এসব সমস্যার কারণে এবং দীর্ঘদিন কাজ করে যখন শ্রমিকরা দেখছে তাদের সামনে আগামী দিনগুলো অন্ধাকার থেকে অন্ধকারময় তখনই তারা হতাশ, হতবাক এবং তারপর ক্ষুব্ধ। অন্যদিকে ক্রমবর্ধমান ও সম্ভাবনাময় গার্মেন্ট শিল্পকে নিয়মের আওতায়, পরিচ্ছন্ন কাঠামোয় আনার ব্যাপারে সরকার উদাসীন। মালিক পক্ষ নিজেদের সুবিধামতো করে বেতন-কাঠামো ও কর্মীদের খাটায়। বিপুল পরিমাণ অর্থ মুনাফা করলেও গার্মেন্ট কর্মীদের ভাগ্য তিমিরেই থেকে যাচ্ছে। গার্মেন্ট কর্মীদের নিজেদের অধিকার আদায়ের জন্য ঐক্যবদ্ধ বা ট্রেড ইউনিয়ন করার পথ রুদ্ধ রাখায় অধিকারও ঠিকমতো আদায়ের সুযোগ পাচ্ছে না। এসব হতাশা ও ক্ষুব্ধতা ভেতরে ভেতরে দানা বেঁধে গার্মেন্ট শিল্পে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়। ”
ঠিক তাই। এটাই মূল কথা। মালিকরা সারা বছর হাপিত্যেশ করে যে তাদের লাভ নেই, তারা লোকসান গুনছে, বায়ার অর্ডার বাতিল করেছেসহ হ্যান ত্যান একটা না একটা অজুহাত তারা দিয়েই যাচ্ছে। কিন্তু লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই ব্যবসা শুরু করার পর তাদের কেউ কি লোসান হচ্ছে বলে তার দামি বাড়ি-গাড়ি-বিলাস-ব্যাসন বন্ধ করেছে? কেউ কি গাড়ি ছেড়ে রিকসায় চড়েছে? কেউ কি অন্য ব্যবসা থেকে টাকা এনে এখানে ঢেলেছে? না। বরং একটা ফ্যাক্টরি দিয়ে বছর ঘুরতে না ঘুরতে আর একটা খুলে বসেছে।
“বর্তমান সরকার সম্পূর্ণ ভাবেই একটি পুলিশে রাস্ট্র।এই সরকার আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছে তাই টিকে থাকার জন্য সরকার পুলিশ-র্যা ব নির্ভর হয়ে পরেছে। তাই যেকোনো পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ পাঠিয়ে দেয়, বিশাল কর্মী বাহিনীর সামনে পুলিশ অসহায় ও কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে বেপরোয়া হয়ে লাঠি পেটাসহ কর্মীদের ওপর চালায় নির্যাতন। পরিস্থিতি ঘোলাটে হয়ে ওঠে। সরকার স্থায়ী সমাধানে মালিক-শ্রমিক এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে গার্মেন্ট শিল্পের সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে উদাসীন বলেই মনে হয়।”
১০০ ভাগ সহমত। দারুন বলেছেন। কংগ্রাটস ম্যান!
“অস্থিরতার কারণ যে শুধু বেতনভাতা কিংবা অত্যাচার-নির্যাতন নয়, এর পেছনে দেশি-বিদেশি স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র সক্রিয় থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলাম। আরো আজে হুজুগে বাংগালীর গুজব প্রিয়তা। মাঝে মাঝে শ্রমিক হত্যার গুজবেও কোটি কোটি টাকার সম্পদ নষ্ট করছে একশ্রেনের শ্রমিক। সে ব্যাপারে সরকার ও মালিক পক্ষকে সতর্ক থাকার জন্য আহ্বান জানানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত দাবি-দাওয়াসহ সহানুভূতির দৃষ্টিতে বিবেচনা করে সমাধানের উপায় উদ্ভাবনের জন্যও অনুরোধ সব মহলের। বিদেশী শক্তির ইন্ধনের কথা গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টেও আছে। এখন গোয়েন্দা সংস্থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, শ্রম মন্ত্রণালয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিজিএমইএ ও বিকেএমইএকে জানিয়েছে, গার্মেন্টস শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানো না হলে এ খাতে বড় ধরনের আন্দোলন গড়ে উঠতে পারে। কোনো রাখঢাক নয়, গোয়েন্দা সংস্থা যখন সরাসরি তাদের আশঙ্কার কথা জানিয়েছে, তখন আর কোনো সন্দেহ থাকতে পারে না যে, শ্রমিকদের অর্থনৈতিক আন্দোলনের আড়ালে তৃতীয় কোনো পক্ষ বড় ধরনের খেলায় চাল দিচ্ছে। তারাই নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নেড়ে তিলকে তাল করার চেষ্টা করছে।কিন্তু দূর্ভাগ্যের বিশয়-গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্টকে সরকার ব্যাবহার করছে বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের শায়েস্তা করায়! ”
গোয়েন্দা সংস্থার বিশ্লেষণের উপর কি ভরসা করতে পারবেন? আজ পর্যন্ত তারা দেশের কোন অঘটনের খবর আগে দিতে পেরেছে? একটিও না। এই যে বললেন;
“শ্রমিকদের অর্থনৈতিক আন্দোলনের আড়ালে তৃতীয় কোনো পক্ষ বড় ধরনের খেলায় চাল দিচ্ছে। তারাই নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নেড়ে তিলকে তাল করার চেষ্টা করছে।” এটা গার্মেন্ট মালিকদের কথা। তারা এই কথাটি গত কয়েক বছর ধরে বলে আসছেন। এ নিয়ে সরকারের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী একাধিক সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারও করেছে। জেলে পুরেছে। কিন্তু কখনোই সর্বতভাবে প্রমান হয়নি যে এর পেছনে তৃতীয় কোনো অশুভ শক্তির ইন্ধন আছে।
এই ‘তৃতীয় শক্তি”র জুজুটা মালিকরা নিজেদের স্বার্থেই ব্যবহার করে। এটা করলে নিজেদের চুরিচামারি আর বেশুমার মুনাফা হাতনোটা জায়েজ হয়ে যায়।
যে শিল্পটি সম্পূর্ণভাবেক নির্ভর করে শ্রমিকের উপর সেই শিল্প থেকে মুনাফা তুলে শ্রমিককে ছিবড়ে বানিয়ে তারা কাদের দিয়ে কাজ করাবে? এক হাজার মালিককে এক সাথে ককটেল করে কি একটা শ্রমিক পয়দা করা যাবে? মালিকরা কি শ্রমিকের মত বার ঘন্টা গাধার মত খাটতে পারবে?
শেষ কথা হলো এই ব্যবসায় যারা আছেন তারা কেউই আসলে শিল্পপতি নন। কেউই শিল্পের নিয়মে শিল্প গড়ে তোলেননি। বিভিন্ন তোলাবাজী পেশা থেকে এখানে এসে সরকারের (আসলে জনগনের) টাকায় কারখানা গড়ে রাতারাতি শিল্প মালিক বনে গেছেন। এরা না বোঝেন শিল্প, না বোঝেন শ্রিল্পে শ্রমদানরত শ্রমিকের বাস্তব চাওয়া-পাওয়া। বোঝেন শুধু কিভাবে রাতারতি কোটি কোটি টাকার মালিক হওয়া যায়। এইসব বেজন্মাগুলো এই গার্মেন্ট না থাকলে জাস্ট কেরানিগিরি অথবা দোকানদারি করে খেত। কিন্তু শ্রমিক তার যে মূল সম্পদ শ্রম বিক্রি করা, তা সে যে কোনো অবস্থানে থেকেও করতে পারে। পারবে।
সুতরাং গার্মেন্ট বন্ধ হওয়া মানে শ্রমিকের মৃত্যু নয়, বরং উটকো ফড়িয়ে ব্যাপারিদের বাবুগিরি ছুটে যাওয়া।
আবারো আপনার বিশাল মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।
৪. ১৭ ই জুন, ২০১২ দুপুর ২:৫৩০
বাংলাদেশী পোলা বলেছেন: গার্মেন্টস শিল্পের সমস্যার চমতকার বিশ্লেষন।
পোস্টে প্লাস।
১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:২৯০
লেখক বলেছেন:
এতে করে লাভ হয়না কিছুই। যথারীতি সরকার মালিকদের পাহাদার হিসেবে নির্লজ্জের মতো দালালী করছে। যথারীতি মালিকরা বিনা প্রতিরোধে তাদের মামদোবাজী চালিয়ে যাচ্ছে। এবং যথারীতি মধ্যবিত্ত সুশীলরা দূরে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখছে!
৫. ১৭ ই জুন, ২০১২ রাত ৯:০৪০
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া
কতদিন পর আবারও দুখীদের দুঃখ নিয়ে তোমার পোস্ট!!!
১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:৩২০
লেখক বলেছেন:
অনেক দিন থেকে আসব আসব করেও সময় এবং উৎসাহ হচ্ছিল না। অবশেষে আবার তোমাদের বাড়িতে ফিরলাম। এবং তোমাদের দেখাও পেলাম।
কেমন ছিলে ভাইয়া?
৬. ১৭ ই জুন, ২০১২ রাত ৯:০৭০
সব কিছুর পরিবর্তন চাই বলেছেন: এর পিছনে গার্মেন্টস সেক্টরে কর্মরত ভারতীয়রা সবচেয়ে বেশি দায়ী। তারা এদেশের তৈরী পোষাকশিল্পকে পঙ্গু করে ফেলতে চায়।
১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১:২৫০
লেখক বলেছেন:
তাই নাকি? তাহলে তো আমাদের পুলিশকে শ্রমিক না ঠেঙ্গিয়ে ভারতের সেই ‘কুচক্রিদের’ বিরুদ্ধে জেহাদে নেমে পড়া উচিৎ!
৭. ১৮ ই জুন, ২০১২ সকাল ১০:৪৭০
আরিফ রুবেল বলেছেন: এটা আর নতুন কি ! এরকমটাই তো হয়ে আসছে এতদিন ধরে।
১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১:৪৯০
লেখক বলেছেন:
সম্ভবত আরো বছরের পর বছর এরকমটাই হতে থাকবে। নিবীর্য, নির্লজ্জ প্যারাসাইট মধ্যবিত্তরা যতদিন দেখাউল্লাহ থেকে যাবে ততদিন এরকমটাই হতে থাকবে রুবেল।
তার পরও আশা আছে। আশা থাকবে।
একদিন এমনও দিন আসবে। নিশ্চই আসবে। সেদিন ব্যারেল, ব্যাটন আর জলকামানের মুখ ঘুরে যাবে। যাবেই।
৮. ১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১২:৪২০
আল – বিরুনী প্রমিথ বলেছেন: প্রথম কথা , রাষ্ট্রের নতজানু অবস্থান আপনার লেখার শিরোনামকে ইতোমধ্যে উল্টে দিয়েছে বলে আমি মনে করি । অদূর ভবিষ্যতে বরং রাষ্ট্র গার্মেন্টস মালিকদের সংগঠনের প্যারালাল হয়ে উঠতে পারে কিনা তা গবেষনার এবং লেখালেখির বিষয় হতে পারে । দ্বিতীয় কথা , এটা বাংলাদেশ বলেই এমন অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে গার্মেন্টস শিল্প নামক ভাড়াখাটা এই বাণিজ্যের জয়জয়কার দেখা যায় । উন্নত কোন দেশ হলে প্রতিকূল পরিবেশের কারনেই প্রথমে এখানে গার্মেন্টস শিল্প গড়ে উঠতে পারতো বলে মনে হয়না ।
১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ১:০৫০
লেখক বলেছেন:
রাষ্ট্রের নতজানু হওয়ার একটা সীমারেখা থাকে। বিস্ময়করভাবে এখানে তাও নেই। তুমি যথার্থই বলেছ; রাষ্ট্রকেই বরং কিছুদিন পর কোশেশ করতে হবে গার্মেন্ট মালিকদের প্যারালাল হতে পারে কিনা তা দেখার।
রাষ্ট্রের আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে রাষ্ট্রের এবং মালিকদের পক্ষে যে নির্লজ্জ আচরণ করছে তা দেখে মনে হতেই পারে যে এই রাষ্ট্রে পক্ষ দুটি। এক পক্ষ শ্রমিকসহ সাধারণ মানুষ, অন্য পক্ষ রাষ্ট্র। ভিন দেশীদের আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার কাজটিই তারা শ্রমিক পেদিয়ে করছে বলে পুরষ্কৃত হয় অভিনন্দিত হয়। বাহবা পায়। এমন আবালচোদা ব্যবস্থা বিশ্বের আর কোথাও আছে বলে আমার মনে হয়না।
৯. ১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ২:২৪০
শেষের_কবিতা বলেছেন: কিছুদিন আগে এক গার্মেটস শ্রমিকের সাথে আমার কথা হয়। আমার আত্বীয়। এসেছিল ঢাকা মেডিকেলে তার চিকিৎসাধিন বোন কে দেখতে। এক পর্যায়ে জানাল, সেদিন মেডিকেলে আসার জন্য তার ৮৪০ টাকা কাটা যাবে । খটকা লাগল, বেতনের হিসাবে ১ দিনে ৮৪০ টাকা তো অনেক বেশী! বিস্তারিত জেনে আমি থ বনে গেলাম! তাদের বেতনের (হাজিরা বোনাস, আরও কি কি যেন) মিলিয়ে একটা অংশ হল শর্তযুক্ত। একদিন গরহাজির হলেই ঐ মাসের বেতনের ঐ অংশের পুরাটাই কাটা যাবে। বললাম ছুটি নিলে না কেন? তার উত্তর ছুটি চেয়ে কখনো পাওয়া যায় না। অর্থাত ছুটি চাইলে গরহাজির হতে বলে দেয়।
আর মজার ব্যপার হল, ঐ শ্রমিক চাকরিতে বেশ সন্তুস্ট, কারন সে নাকি অন্য কারখানার তুলনায় ভাল সুবিধা ভোগ করছে সেখানে! বুঝুন অবস্থা!!
১৯ শে জুন, ২০১২ সকাল ১০:০৮০
লেখক বলেছেন:
এইসব ফেরেপবাজী আরোপ করতে পারা এক বিশেষ ধরণের যোগ্যতা। এই যোগ্যতা আজকাল বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া বিবিএ, এমবিএ পাশ স্মার্ট তরুণরা অর্জন করেছে। তারাই এইসব প্রতিষ্ঠানে এইচ আর-এ চাকরি করে। এরাই এই ভানুমতির হিসেব কষে দেয়। জাবদা খাতায় থাকে এক হিসেব, আবার মূল খাতায় অন্য হিসেব।
ব্যাংকেও একই অবস্থা। ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার জন্য একজিকিউটিভের বেতন দেখানো হয় ৬০/৭০ হাজার। দেয়ার সময় দেয় ৩৮ হাজার থেকে ৪০ হাজার।
১০. ১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ২:৩৮০
নাজনীন১ বলেছেন: অনেকদিন পর মনজুর ভাই! কেমন আছেন?
১৯ শে জুন, ২০১২ সকাল ১০:১১০
লেখক বলেছেন:
হুম। শেষ পর্যন্ত আবার লেখা শুরু করলাম। আর রচনামূলক লেখার জন্য এটাই আদর্শ জায়গা।
ভালো আছি বলা যাবে না। ইদানিং মাঝে মাঝেই অসুস্হ হয়ে পড়ছি……
আপনি কেমন আছেন?
১১. ১৯ শে জুন, ২০১২ সকাল ৭:০২০
শাহেরীন বলেছেন: Click This Link
১৯ শে জুন, ২০১২ দুপুর ২:০৩০
লেখক বলেছেন:
ধন্যবাদ শাহেরীন। আজ দেখলাম এই লিংকটা বেশ তাড়াতাড়িই ওপেন হলো!
১২. ১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ৮:৪১০
নাজনীন১ বলেছেন: আমি আছি মোটামুটি। আপনার কিরকম অসুস্থতা?
ব্লগে আগের মতো নিয়মিত হলে খুশি হবো।
২০ শে জুন, ২০১২ দুপুর ১২:৪০০
লেখক বলেছেন:
অসুস্থতা বলতে আমার সেই পুরোনো রোগ-মাথাব্যথা। তবে সব চেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে ভীষণভাবে সময় কমে যাওয়া। কামলাগিরি করে বাসায় ফিরতে ফিরতে রাত দশটা!
নিয়মিত হতে পারলে তো ভালই হয়। আমি নিজেও খুশি হই। চেষ্টা থাকবে।
শুভকামনা নাজনীন।
১৩. ১৯ শে জুন, ২০১২ রাত ৯:০৬০
পাস্ট পারফেক্ট বলেছেন: সবই ঠিক আছে। মালিকরা ঠকাবে, এজন্য শ্রমিকরা আন্দোলন করবে, ধর্মঘট করবে, বেতন চাইবে। কিন্তু এই দাবি আদায়ের জন্যে তাদের কারখানা ভাংচুর কোন অবস্থাতেই মেনে নেওয়া যায় না – তা আপনি যতই ইনিয়ে বিনিয়ে তাদের পক্ষে সাফাই গান না কেন।
২০ শে জুন, ২০১২ সকাল ১১:০৫০
লেখক বলেছেন: বিষয়টা সাফাইয়ের নয়। সারভাইব এর প্রশ্ন। তার বা৭চার জন্য যেটুকু দরকার তা না দিয়ে তাকে হত্যা করা হলে, পিটিয়ে আহত করা হলে সে বসে বসে আঙ্গুল চুষবে সেটা কি করে আশা করা যায়?
প্রথমেই শ্রমিকরা কারখানা ভাংচুর করেনা। কারণ তারা যতই অশিক্ষিত হোক, এতটুকু বোঝে যে এই কারখানায় কাজ করেই তার জীবীকা হয়। সুতরাং সেই কারখানা ভাংচুর করলে নিজের রুটি রুজিই নষ্ট হবে এটা শ্রমিকরা বোঝে না তেমন ভাবার কারণ আছে কি?